নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষাও শহীদ দিবস ২১ ফেব্রুয়ারি । যথাযোগ্য মর্যাদায় সারা বিশ্বে এই দিনটি পালন করা হলেও অযত্ন ও অবহেলায় পড়ে আছে আমতলী উপজেলার গুলিশাখালী ইউনিয়নের গুলিশাখালী ইসহাক মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠের শহীদ মিনারটি। ১৯৭৭-৭৮ সালে শহীদদের স্মরণে স্কুলের উদ্যোগে নির্মিত হয় একটি পাকা শহীদ মিনার। কিন্তু নির্মাণের পর থেকেই রক্ষণাবেক্ষণ আর অযত্ন-অবহেলায় শহীদ মিনারটি এখন নাম মাত্র রয়েছে। শহিদ মিনারটি লাতাপাতায় ভরে আছে। স্থানীয়রা জানান, প্রতি বছর ২১ ফেব্রুয়ারি এলে কোনো রকম পরিষ্কার করা হলেও পরদিন থেকেই বাজারের ব্যবসায়ীরা ময়লা আবর্জনা এখানে ফেলা শুরু হয়। স্কুল কর্তৃপক্ষের কোন দৃষ্টি নাই শহিদ মিনারের প্রতি। শহীদ মিনারের বেহাল দশা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ ও দ্রুত রক্ষণাবেক্ষণের দাবি জানিয়েছেন বিশিষ্টজনেরা। সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার ঐতিহ্যবাহী ইসহাক মাধ্যমিক বিদলয়ের মাঠের পশ্চিম পাশের অবস্থিত শহীদ মিনারটি। শহীদ মিনারের চারপাশ ও শহিদ মিনারের ওপরে ময়লা-আবর্জনার স্তুপ। শহীদ মিনারটির পাশে কিছু ব্যবসায়ী স্কুলের জমি দখল করে ঘর ও ব্যাবসা গড়ে উঠেছে। এতে শহীদ মিনারটি আর এখন দেখা যায় না। এতে স্কুল কর্তৃপক্ষের কোন মাথা ব্যাথা নাই বলে জানান স্থানীয়রা। স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো.শাহাদাৎ হোসেন সেলিম বলেন, ব্যবসায়ীদের ঘর উত্তোলন করতে নিষেধ করা হয়েছে। কিন্তু তারা কারো কথা শোনে না। গুলিশাখালী ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি কামাল হোসেন মৃধা বলেন, শহীদ মিনারটির অযত্ন অবহেলায় পড়ে রয়েছে। শহীদ মিনারটির পাশে যে ভাবে ময়লা আবর্জনা পড়ে থাকে তাতে তরুণ প্রজন্মের কাছে ভাষা দিবসের গুরুত্ব কমে যাবে। উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমাণ্ডার অ্যাড. আবুল কালাম সামসুদ্দিন সানুসহ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা বলেন, ভাষা শহীদদের স্মৃতি ও আত্মত্যাগের সঠিক ইতিহাস নতুস প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতেই দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ পাড়া-মহল্লায় ও গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার তৈরি করা হয়। শহীদ মিনার যে ভাবে অযত্ন অবহেলায় পড়ে আছে এতে তরুন প্রজন্মের কাছে এটির গুরুত্ব কমে যাবে। স্থানীয়রা অভিযোগ করেন সম্প্রতি স্কুলটিতে শিক্ষক কর্মচারী নিয়োগে লাখ লাখ টাকা উৎকোচ নেওয়া হয়েছে । অথচ শহীদ মিনারটি পড়ে আছে অযত্ম অবহেলায়। এ ছাড়াও প্রধান শিক্ষক সাহাদাৎ হেসেন সেলিমের বিরুদ্ধে স্কুলের নিকট বর্তী তার বাসায়বসে নিয়মিত ছাত্র-ছাত্রীদের প্রাইভেট পড়ানোর অভিযোগ রয়েছে। ইউপি চেয়ারম্যান অ্যাড. এইচ এম মনিরুল ইসলাম মনি বলেন, আমি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর বিষয়টি জেনেছি। স্কুল র্কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আশরাফুল আলম বলেন, বিষয়টি এর আগে কেউ আমাকে জানায়নি। শহীদ মিনার রক্ষণাবেক্ষণ, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a Reply