নিজস্ব প্রতিবেদক
ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার শুক্তাগড় মাহমুদিয়া দাখিল মাদরাসার তিন কক্ষ বিশিষ্ট একতলা ভবনটির বয়স প্রায় ২৬ বছর। এরই মধ্যে ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় খোলা আকাশের নিচেই চলছে পাঠদান। সরেজমিনে দেখা গেছে, ভবনটি এতোটাই ঝুঁকিপূর্ণ যে ছাদের পলেস্তরা ও দেয়াল ভেঙে যেকোনো সময় পড়তে পারে শিক্ষার্থীদের ওপর। এমন আশঙ্কায় গত জানুয়ারি থেকে মাদসার মাঠে খোলা আকাশের নিচেই শিক্ষার্থীদের পাঠদান করাচ্ছেন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের আওতায় ১৯৯৭ সালে প্রায় আট লাখ টাকা ব্যয়ে শুক্তাগড় মাহমুদিয়া দাখিল মাদারাসার জন্য তিন কক্ষ বিশিষ্ট একটি ভবন নির্মাণ করা হয় । তিন কক্ষের মধ্যে একটিতে অফিস রুম আর বাকি দুইটি কক্ষের মাঝে টিনের বেড়া দিয়ে চারটি শ্রেণি কক্ষ বানিয়ে পাঠদান করানো হয়। কিন্তু কাজের মান খারাপ হওয়ায় কয়েক বছর আগে থেকেই ভবনের ছাদ চুঁইয়ে পানি পড়তে শুরু করে । অফিস কক্ষের পিলার ভেঙে পড়ায় সুপারি গাছের খুঁটি দিয়ে মেরামত করা হয়েছে। ভবনের প্রতিটা পিলার ফেটে লোহার রড বের হয়ে গেছে। ভবনের পলেস্তরা খসে খসে পড়ছে । পলেস্তরা পড়ে কয়েকজন শিক্ষার্থী আহতও হয়েছে। যেকোন সময় ভবন ধসে পড়তে পারে এই আশঙ্কা বিরাজ করছে শিক্ষার্থীদের মাঝে। এ অবস্থায় দিন দিন শিক্ষার্থীর উপস্থিতি কমে যাচ্ছে। মাদরাসার এই ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের পাশে আরও একটি জরাজীর্ণ কাঠের শ্রেণিকক্ষ রয়েছে। সেই শ্রেণি কক্ষে ও বাইরে মিলিয়ে প্রথম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদান অব্যাহত রয়েছে। বর্তমানে এই মাদরাসায় শিক্ষার্থীর সংখ্যা মোট ২৭৫ জন। মাদরাসা শিক্ষার্থী সাথি আক্তার জানায়, ভবনের পিলারগুলোর অবস্থা এতটাই খারাপ মনে হয় যেকোনো সময় ভবন ধসে পড়বে। তাই ঝুঁকিপূর্ণ ক্লাস রুম পরিহার করে আমরা মাঠেই ক্লাস করছি। স্থানীয় অভিভাবক নুরুল হায়দার জানায়, ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের কারণে বাচ্চাদের মাদরাসায় পাঠাতে ভয় হয়। এখন শুনছি শিক্ষকরা ছাত্র ছাত্রীদের নিয়ে বাইরে ক্লাস করায়। এভাবে কতদিন চলবে। মাদরাসায় নতুন ভবন দরকার। মাদরাসার সুপার মাওলানা মাহবুবুর রহমান বলেন, মাদরাসা ভবনের জরাজীর্ণ অবস্থা কয়েক বছর আগে থেকেই। এখন অবস্থা বেশি খারাপ হওয়ায় বাইরে ক্লাস নিচ্ছি। আমরা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে বিষয়টি জানিয়েছি। সামনে বর্ষাকাল, তার আগেই যদি কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করে তাহলে তো ক্লাস বন্ধ রাখা ছাড়া উপায় থাকবে না। ঝালকাঠি জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, আসলে ভবনের ব্যাপারে আমাদের কিছু করার থাকে না। স্থানীয় এমপির ডিও লেটারের মাধ্যমে এ ভবনগুলোর বরাদ্দ আসে। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে আমাকে বিষয়টি লিখিতভাবে জানালে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে ভবনের ব্যাপারে আবেদন জানাতে পারি। তারাই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন।
Leave a Reply