নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
বরিশালে মুক্তিযোদ্ধার জমির ওপর দিয়ে সরকারি ড্রেন নির্মাণে বাধা দেওয়ায় মুক্তিযোদ্ধার দুই ছেলেকে তিন মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমান আদালত। এ ঘটনায় মোট ৯ জনকে আটক করা হয়েছিল। ঘটনার সময়ে চকোলেট বোমা বিস্ফোরন করা হয় বলে প্রশাসন থেকে দাবী করা হয়েছিল। মুক্তিযোদ্ধার পরিবার দাবি করেছেন, ইউপি নির্বাচনে স্থানীয় মেম্বারের পক্ষে কাজ না করায় আক্রোশের শিকার হচ্ছেন তারা। ঘটনাটি সোমবার (২৩ জানুয়ারি) দুপুরে বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলার ৪ নং চাঁদপাশা ইউনিয়নে ঘটে। আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বরিশাল মেট্রোপলিটন এয়ারপোর্ট থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) লোকমান হোসেন। তিনি জানান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে ছিলেন। তার নির্দেশে ৯ জনকে এখন পর্যন্ত আটক করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুসরাত ফাতিমা বলেন, চাঁদপাশা ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের আরজী কালিকাপুর গ্রামের বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হালিম কিছু সরকারি জমি দখল করে নিজের দাবি করেন।আমরা সেই জমিতে সরকারি ড্রেন নির্মাণ করবো। ওখান থেকে ড্রেন হলে বর্ষায় ওই এলাকায় জলাবদ্ধতা হবে না। জমি নিজের দাবি করে এডিএম কোর্টে মামলাও দিয়েছেন। কিন্তু আমি সেই কোর্ট থেকে কাজ করার অনুমতি নিয়ে এসেছি। তাছাড়া বীর মুক্তিযোদ্ধাকে ক্ষতিপূরন দিতে চেয়েছি। তিনি নেননি। কাজ শুরু করলে তার পরিবার ও বহিরাগত কিছু লোক বাধা দেন। তারা আমার ও পুলিশের ওপর হামলার চেষ্টাও করেন। ইউএনও বলেন, দলবদ্ধ লোকজন চকোলেট বোমা বিস্ফোরন করেন। এজন্য তাদের আটক করা হয়েছে। তাছাড়া তারা বোমা কোথায় পেলো সেটিও খতিয়ে দেখা দরকার। এ ঘটনায় বীর মুক্তিযোদ্ধার দুই ছেলে নাইম হাসান ও মাইনুল ইসলামকে তিন মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তবে পাল্টা অভিযোগ করেছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হালিম। তিনি বলেন, ইউপি নির্বাচনে বর্তমান ইউপি সদস্য মোসলেম উদ্দিনের বিরোধিতা করায় আমার বাড়ির উপর থেকে ফসলী জমির পানি নিষ্কাশনের ড্রেন নির্মান করাচ্ছেন। আমি ক্রয়কৃত ও পৌত্রিক সূত্রে পাওয়া ৪২ শতক জমির উপরে গত ৫ বছর আগে বাড়ী তৈরি করি। আমি এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছি। মামলা নং-০৪/২০২৩। মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হালিম বলেন, জমি ব্যতিত পাশের অন্যত্র অব্যবহৃত জমি থেকেও ওই পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থা করা গেলেও ইউপি সদস্যের ইন্ধনে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে আমাদের ভিটা বাড়ি নষ্ট করে ড্রেন নির্মান করছে। তিনি বলেন, মেম্বারের কথামত আমাদের নির্যাতন করছে উপজেলা প্রশাসন। তারা আমার পুরো পরিবার ধরে নিয়ে গেছে। আমাদের ফাঁসানোর চেষ্টা করছেন। আমি প্রধানমন্ত্রীর সাহায্য চাই। বিনা কারনে আমার ১০ লাখ টাকার সম্পদ নষ্ট করেছে। আমার ছেলেদের সাজা দিয়েছে। মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে হয়রানি করার বিচার চাই। অভিযুক্ত ইউপি মেম্বারের সাথে যোগাযোগ করা হলেও মুঠোফোনে কল করেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
Leave a Reply