1. admin@anusondhantv.com : admin :
মঙ্গলবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৭:৩৬ পূর্বাহ্ন

শিক্ষার্থী-শ্রেণিকক্ষ নেই, তবুও সরকারি বিদ্যালয়

Reporter Name
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩
  • ২২২ Time View

নিজস্ব প্রতিবেদক

শিক্ষার্থী, শ্রেণিকক্ষ কিংবা অবকাঠামো কোনোটিই নেই, তবুও এটি একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। বাস্তবে আছে শুধু পতাকা, সাইনবোর্ড আর শিক্ষক। ঢাল-তলোয়ার ছাড়া নিধারাম সরদারের মতো। এমনই একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় দেখা গেছে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার মোগলবাসা ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর গ্রামে। স্কুলটির নাম উত্তর মাঝের চর আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। খাতা-কলমে স্কুলটিতে রয়েছে পাঁচজন শিক্ষক ও ৮০ জন শিক্ষার্থী। মাঝেমধ্যে শিক্ষকদের উপস্থিতি থাকলেও থাকে না শিক্ষার্থীরা। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আবাদি জমির মাঝখানে কয়েকটি খুঁটির ওপরে একটি ছোট টিনের চাল। বেড়া-দরজা-জানালা কিছুই নেই। তবে চালের সামনে বাঁশের আগায় জাতীয় পতাকা উড়ছে। স্কুলটির সামনে একটি সাইনবোর্ড আছে; যাতে বিদ্যালয়ের নাম লেখা। দুটি ভাঙা বেঞ্চ আর কয়েকটি প্লাস্টিকের চেয়ার এবং একটি টেবিলের ওপর শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের হাজিরা খাতা দেখতে পাওয়া যায়। সেখানে দুয়েকজন অভিভাবকসহ বসে আছেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক। নেই কোনো শিক্ষার্থী কিংবা শিক্ষকদের পাঠদানের ব্যস্ততা। বিদ্যালয়টিতে যাওয়ার কোনো সড়ক বা পথ নেই। যেতে হয় আবদি জমির আইল ধরে। সহকারী শিক্ষক আশরাফিয়া বিনতে আকতার বলেন, বিদ্যালয়ে আসার কোনো পথ নেই। জমির আইল দিয়ে আসা-যাওয়া করতে হয়। এজন্য বাচ্চারা বিদ্যালয়ে আসে না। বিদ্যালয়ের শিশুশ্রেণি হতে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত প্রায় ৮০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। এরমধ্যে ১০-১৫ জন শিক্ষার্থী আসে। জমির আইল ভিজে থাকায় প্রায় সময় পিছলে পড়ে আহত এবং পোশাক নষ্ট হয়ে যায়। অভিভাবক কাজলি বেগম বলেন, স্কুলের ঘর নেই, শুধু পতাকা, সাইনবোর্ড আছে দেখে বোঝা যায় এটি স্কুল। কিন্তু বাস্তবে টিনের চাল টুকু দেখে কেউ বুঝতে পারবে না এটা সরকারি স্কুল। অভিভাবক লাইলী বেগম বলেন, সরকারি স্কুল হলেও এখানে ঘর, বেঞ্চ, টিউবওয়েল, টয়লেট এমনকি স্কুলে আসার রাস্তাও নেই। এমন পরিবেশ দেখে অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের এখানে পাঠান না। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলতাফ হোসেন বলেন, বিদ্যালয় স্থানান্তর আর জমি-সংক্রান্ত জটিলতার কারণে এ অবস্থা। দানকৃত জমিতে দাগ নম্বরের সমস্যার কারণে নতুন ভবন হচ্ছে না। অথচ একই মালিকের জমি বিদ্যালয়ের চারপাশে। বিদ্যালয়ের নতুন ভবনের জন্য বরাদ্দ আসলেও জমি-সংক্রান্ত জটিলতার কারণে অর্থ ছাড় হচ্ছে না। জমিদাতা ও ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ বলেন, আমি এক বিঘা জমি দান করেছি বিদ্যালয়ের নামে। এখন জমি-সংক্রান্ত কি জটিলতা হয়েছে তারাই ভালো জানেন। প্রায় দুই বছর থেকে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি না থাকা এবং বিদ্যালয়ের উন্নয়ন না হওয়ার জন্য তিনি কর্তৃপক্ষকে দায়ী করেন। উপজেলা শিক্ষা অফিসার লুৎফর রহমান বলেন, জমি সংক্রান্ত সমস্যা থাকায় ভবন করা যাচ্ছে না। সদর অ্যাসিল্যান্ডসহ (ভূমি কর্মকর্তা) বিদ্যালয়ের স্থান পরিদর্শন করা হয়েছে। জমি-সংক্রান্ত জটিলতা দূর করতে প্রধান শিক্ষককে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু প্রধান শিক্ষকের অবহেলার কারণে বিদ্যালয়টির এমন নাজুক অবস্থা।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

© All rights reserved © 2020 TV2Channel
Theme By Bongshai IT